আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল—এ তথ্য জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। তবে হামাস জানিয়েছে, তারা প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছে, যদিও এতে তাদের প্রধান দাবিগুলো অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ৬০ দিনের অস্ত্রবিরতি এবং প্রথম সপ্তাহেই ২৮ জন ইসরায়েলি বন্দির (জীবিত ও মৃত) মুক্তির কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ১২৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দি এবং ১৮০ জন নিহত ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরতের প্রস্তাব রয়েছে। এই পরিকল্পনায় গ্যারান্টি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেই গাজায় ত্রাণ পৌঁছানো শুরু হবে। সবশেষ ৩০ জন বন্দিকে মুক্তি দেবে হামাস, যদি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে এতে যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ করার কোনো নিশ্চয়তা ইসরায়েলের তরফ থেকে দেওয়া হয়নি।
হামাস বলছে, প্রস্তাবটি ইসরায়েলপন্থী এবং তাদের চাওয়া—যুদ্ধ থামানো, সেনা প্রত্যাহার ও পূর্ণ ত্রাণ প্রবেশ—অন্তর্ভুক্ত নেই। হামাস আশঙ্কা করছে, ইসরায়েল হয়তো আবার যুদ্ধ শুরু করতে পারে, যেমনটা গত মার্চে করেছিল।
ইসরায়েল বলছে, হামাসকে পুরোপুরি অস্ত্রহীন ও সরকার পরিচালনার ক্ষমতা থেকে সরিয়ে না দিলে যুদ্ধ থামাবে না। ৫৮ জন ইসরায়েলি এখনো গাজায় আটক রয়েছে—তাদের প্রত্যাবর্তনের আগেও যুদ্ধবিরতিতে যাবে না বলে জানিয়েছে তারা।
ইসরায়েলের ডানপন্থী জোট সরকারও চাপে আছে। যুদ্ধ দ্রুত শেষ হলে সরকার ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কট্টর ডানপন্থী মন্ত্রী ইতামার বেন গবির বলেছেন, “হামাস যখন আবার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে, তখন আর কোনো অজুহাত থাকতে পারে না। এবার সর্বশক্তি দিয়ে হামাস ধ্বংস করতে হবে।”
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF) গাজায় ত্রাণ বিতরণের জন্য তৃতীয় পয়েন্ট চালু করেছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থা তাদের উদ্যোগকে অপর্যাপ্ত ও ত্রুটিপূর্ণ বলে সমালোচনা করেছে। মঙ্গলবার ত্রাণ বিতরণের সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে একজন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হন।
যুক্তরাষ্ট্রের দূত স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, তারা দুই পক্ষকে নিয়ে নতুন যুদ্ধবিরতির খসড়া প্রস্তুত করছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন—স্থায়ী শান্তির পথে অগ্রগতি সম্ভব।
ইসরায়েলের আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫১ জনকে অপহরণ করা হয়। তার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ সামরিক অভিযান চালায়।
কিউটিভি/আয়শা/০৩ জুন ২০২৫, /সন্ধ্যা ৬:৩৪