আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যদের মিছিল করে নির্বাচন কমিশন ভবন অভিযান করতে দিল না দিল্লি পুলিশ। সংসদ ভবন চত্বর থেকে বেরোতেই রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রসহ তাদের গ্রেফতার করা হলো। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে সংসদ মার্গে দেখা গেল সেই অভিনব দৃশ্য। পরে অবশ্য আটক সবাইকে মুক্তি দেওয়া হয়।
বিভিন্ন ভাষায় লেখা এসআইআরবিরোধী পোস্টার ও ব্যানার নিয়ে মল্লিকার্জুন খাড়গে, শারদ পাওয়ার, রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র, অখিলেশ যাদব, মহুয়া মৈত্র, শতাব্দী রায়, ডেরেক ওব্রায়ান, টি আর বালু, তিরুচা শিবা, মনোজ ঝাসহ সব দলের দুই শতাধিক সদস্য অভিযান শুরু করেন। সংসদ ভবন থেকে বেরোনোর পর সংসদ মার্গে কিছুটা এগোতেই দিল্লি পুলিশ তাদের বাধা দেয়। অভিযান রুখতে রাস্তায় ব্যারিকেড রাখা হয়েছিল। সেই ব্যারিকেড ডিঙিয়ে সংসদ সদস্যরা এগোতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়।
পুলিশের বাধার প্রতিবাদে প্রিয়াঙ্কাসহ নারী সদস্যরা রাস্তায় বসে পড়েন। এ সময় তৃণমূল কংগ্রেসের মহুয়া মৈত্র, মিতালি বাগ অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাহুল, অখিলেশ ও অন্যরা তাদের পরিচর্যায় এগিয়ে যান। তাদের গাড়িতে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে অবস্থান নেওয়া অন্যদের আটক করে অপেক্ষমাণ বাসে তোলা হয়। ‘ইন্ডিয়া’ জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করলেও আম আদমি পার্টির (এএপি) সদস্যরাও এই অভিযানে শামিল হয়েছিলেন।
পুলিশের দাবি, ইসি দপ্তর অভিযানের আগাম অনুমতি বিরোধী সংসদ সদস্যরা নেননি। বিরোধী সংসদ সদস্যদের অভিযোগ, পুলিশ তাদের হেনস্তা করেছে। কারও কারও ওপর বলপ্রয়োগ করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাধা দেওয়া হয়েছে। রাহুল গান্ধী বলেন, এটা সংবিধান বাঁচানোর লড়াই। স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরির লড়াই। গণতন্ত্র না বাঁচলে সংবিধানও বাঁচানো যাবে না। গণতন্ত্র বাঁচাতে গেলে ইসির পক্ষপাত বন্ধ করতে হবে।
সাম্প্রতিককালে কোনো কোনো ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদি ও তার সরকারের প্রশংসা করে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের বিরাগভাজন হয়েছেন কেরালার কংগ্রেসদলীয় সংসদ সদস্য শশী থারুর। দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়লেও এই অভিযানে তিনিও শামিল হন। ইসির বিরুদ্ধে রাহুল যেসব অভিযোগ করেছেন, শশী আগেই তা সমর্থন করেছিলেন। আজ সোমবারও তিনি বলেন, রাহুল যেসব প্রশ্ন তুলেছেন, প্রতিটিই গুরুত্বপূর্ণ ও যথাযথ। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া জরুরি। ইসি তা এড়াতে পারে না, বরং উত্তর না দিলেও মানুষের মনে ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন জাগবে।
আজ বিরোধীদের অভিযান চলাকালেই ইসি জানায়, বেলা ১১টার দিকে ৩০ জন সংসদ সদস্যকে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সে সময় সংসদ মার্গে বিরোধীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি চলছিল। মল্লিকার্জুন খাড়গে ‘এক্স’ মারফত বলেন, তারা ইসিতে স্মারকলিপি জমা দিতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দিল্লি পুলিশ তাদের সেই গণতান্ত্রিক অধিকারও হরণ করে।
আয়শা/১১ আগস্ট ২০২৫/সন্ধ্যা ৬:২৪