আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি : ঢাকার আশুলিয়ায় ডাক্তার আসাদুল হক দুলাল নামের এক বিএনপি নেতার নামে চাঁদাবাজি, ডাকাতি, হত্যাচেষ্টা, লুটপাট ও অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। সোমবার (২১ জুলাই) আশুলিয়া থানার ওসি আব্দুল হাননান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে, গত শুক্রবার ম আশুলিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন কানাডা প্রবাসী মিসেস মরিয়ম ইয়াসমিন। মামলা নং ৫১।
অভিযুক্ত আসাদুল হক দুলাল আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দ্বায়িত্বে আছেন। প্রবাসী মরিয়ম ইয়াসমিনের অভিযোগ, আশুলিয়া থানাধীন দক্ষিণ গাজীর চট এলাকায় তার বাসভবনে একাধিকবার বিএনপি নেতা দুলালের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা চালিয়েছে। মামলায় বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে আসাদুল হক দুলাল তার রাজনৈতিক পরিচয় ও প্রভাব ব্যবহার করে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছেন। তিনি একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী ও দখলবাজ চক্র পরিচালনা করেন, যার মাধ্যমে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।
মামলায় বলা হয়, গত এক মাসে তিনবার প্রবাসীর বাড়িতে হামলা হয়েছে। হামলায় ব্যবহার হয়েছে বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র। সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফেলা, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। সর্বশেষ গত ১৬ জুলাই দুলালের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙে ব্যাপক বোমাবাজি, গুলি, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। মরিয়ম ইয়াসমিনের অভিযোগে আরও বলা হয়, দুলাল নিজেই শুধু নয়, তিনি আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে গড়ে তুলেছেন ভয়ঙ্কর এক সন্ত্রাসী বাহিনী। এর প্রধান আলম নামের কুখ্যাত সন্ত্রাসী, যার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র ব্যবসা, মাদক পাচার ও বহু ফৌজদারি মামলা রয়েছে। দুলালই এই আলমের প্রধান রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক।
মামলায় আরও নাম এসেছে চিহ্নিত সন্ত্রাসী দেলোয়ার, ছোট নূরা, বাবু, ফরিদ, বড় নূরা ও শাহাদাতের। এরা সবাই দুলালের নির্দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত বলে অভিযোগ। মামলা হলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা করেনি পুলিশ। বরং আসামিরা প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে এবং ভুক্তভোগীদের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে অভিযুক্তরা এতদিন ধরেই আইনের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে। তারা বলছেন, “চাঁদাবাজি, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যাচেষ্টা এগুলো গুরুতর অপরাধ। রাজনৈতিক পরিচয়ে কোনো ছাড় দেয়া চলবে না।”
এবিষয়ে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আসাদুল হক দুলালের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, “দুলাল ডাক্তার ৫ আগস্টের পর রাজনীতির প্রভাবে সে আবার এলাকায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। প্রবাসীর খামারে সাম্প্রতিক হামলার পর সে পালিয়ে গেছে। তাকে ধরতে পুলিশ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালাচ্ছে।”
কিউটিভি/আয়শা//২১ জুলাই ২০২৫,/সন্ধ্যা ৭:৫০