ডেস্ক নিউজ : অঙ্গীকার অংশে কিছু পরিবর্তন এনে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনে কমিশনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সনদ চূড়ান্তকরণ এবং বাস্তবায়নের পদ্ধতি নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রাপ্ত পরামর্শ ও সুপারিশমালা পর্যালোচনা করে এটি চূড়ান্ত করা হয়।
বুধবারও কয়েকটি দল সনদের বিষয়ে মতামত জমা দিয়েছে। এসব মতামতকে বিবেচনায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে ফের বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। দু’ একদিনের মধ্যে সনদের চূড়ান্ত খসড়ায় স্বাক্ষর করার জন্য দলগুলোর কাছে পাঠানো হতে পারে।
কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ এর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, সনদকে সংবিধানের ওপর স্থান দেওয়া এবং সনদ নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না বলে খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে সমন্বিত খসড়ায় যে অঙ্গীকারের কথা বলা ছিল, চূড়ান্ত খসড়ায় সেখানে কিছুটা ভাষাগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। এছাড়া বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে ঐকমত্য হলে সেটি সনদে রাখার সিদ্ধান্ত থেকেও সরে আসা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে সনদের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। চূড়ান্ত খসড়াতেও সনদের তিনটি ভাগ থাকবে। প্রথম ভাগে সনদের পটভূমি, দ্বিতীয় ভাগে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হওয়া প্রস্তাব এবং তৃতীয় ভাগে থাকবে সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা। তবে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে, তা জুলাই সনদে উল্লেখ থাকবে না।
উল্লেখ্য, জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করতে ইতোমধ্যে ২৮টি রাজনৈতিক দলের সাথে অনানুষ্ঠানিকভাবে সভা করেছে ঐকমত্য কমিশন। এই প্রক্রিয়ায় কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে মতামত আহবান করে। এ পর্যন্ত ২৬টি দলের পক্ষ থেকে মতামত পাওয়া গেছে। বুধবার ঐকমত্য কমিশন থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবিধানের ঊর্ধ্বে জুলাই সনদকে রাখা, গণভোট, পিআর পদ্ধতি চালুসহ কয়েকটি বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে জোরালো মতবিরোধ রয়েছে। এই মতবিরোধ অবসানে বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণের পাশাপাশি গত রোববার ও সোমবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই ভাগে তৃতীয় দফা সংলাপ করে ঐকমত্য কমিশন। বৈঠকে সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর পক্ষ থেকে বিভিন্ন মতামত আসে। এর মধ্যে আছে গণভোট, রাষ্ট্রপতির প্রোক্লেমেশন, সংবিধান সভা, আগামী সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন ইত্যাদি।
কিন্তু তৃতীয় দফা সংলাপেও সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত সুপারিশ বাস্তবায়ন ইস্যুতে কোন ঐকমত্যে আসা যায়নি। তবে প্রায় সব দল বলেছে, সংবিধান সংশোধন ছাড়া যেসব সংস্কার প্রস্তাব এখনই বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেগুলো অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশের মাধ্যমে করতে পারে। পরে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া মতামত সমন্বয় করে সরকারের কাছে সুপারিশ তুলে ধরবে। সনদ কীভাবে কার্যকর করা হবে, সে সিদ্ধান্ত সরকারই নেবে।
আয়শা/০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, /রাত ৮:৪৪