আন্তর্জাতিক ডেস্ক :সমরনীতিতে চীনের বৈশ্বিক শক্তিধর রাষ্ট্রে উন্নীত হওয়ার যে আকাঙ্ক্ষা- তা ক্রমশই যেন ফিকে হয়ে আসছে। দেশটির বিভিন্ন যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের পাশাপাশি চলতি বছরের মে মাসে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে সমরাস্ত্র প্রযুক্তিতে চীনের ব্যর্থতা ছিলো চোখে পড়ার মত।
ব্রিটিশ জাতীয় দৈনিক ট্যাবলয়েড সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি মিররের এক প্রতিবেদনে এমনই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, পশ্চিমা রপ্তানিকারকদের হটিয়ে সমরাস্ত্র রপ্তানিতে চীনের একক শক্তিধর রাষ্ট্র হওয়ার যে উচ্চাকাঙ্খা ছিলো ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে চীনের ব্যর্থতার ফলে তা এখন হুমকির মুখে।
তা ছাড়া শুধু পাকিস্তানের মত একক আমদানিকারকের উপর নির্ভরশীল হওয়া প্রমাণ করে যে চীন বৈশ্বিক বাজারে সমরাস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে তেমন কোন ক্রেতা তৈরি করতে পারেনি।
দ্যা স্টোকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিচ রিসার্চ ইন্সটিটিউটের তথ্যমতে ২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী সমরাস্ত্র রপ্তানিতে চীনের ২১% পতন ঘটেছে। যা পাকিস্তান ছাড়া পুরো বিশ্বে সমরাস্ত্রখাতে চীনের সংকটময় পরিস্থিতির প্রতি ইঙ্গিত করে।
মে মাসের যুদ্ধ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে হলেও আরেকদিক দিয়ে তা ছিলো সমর প্রযুক্তিতে পশ্চিমা প্রযুক্তি ও চীনা প্রযুক্তির যুদ্ধ। যেখানে বেইজিং পশ্চিমা প্রযুক্তির কাছে ব্যর্থ হয়েছে।
চীনের এইচ কিউ ৯ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা যুদ্ধে ভারতের মিসাইল প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়, যা পাকিস্তানের নূর খান এয়ার বেইসসহ ভিন্ন ভিন্ন নয়টি লক্ষ্য বস্তুতে আঘাত হানে।
অথচ চীনের এইচ কিউ ৯ আকাশপ্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘পেট্রিয়ট অথবা রাশিয়ান এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সমকক্ষ মনে করা হতো।
এছাড়াও অকার্যকর মিসাইল সিস্টেম, ও রাডার সিস্টেমের ফলে এফ -২২ পি ফাইটার যুদ্ধে তার শক্তি বেশি সময় ধরে রাখতে সক্ষম হয়নি। এরপর ভূমি থেকে আকাশের মিসাইল সিস্টেম এফ এম ৯০ সেন্সরও অকার্যকর মনে হয়েছে।
সোমবার বাংলাদেশের উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০ হয়েছে। সোমবার দুপুরে বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমানটি ঢাকার কুর্মিটোলার বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ঘাঁটি একে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের পরপরই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিধ্বস্ত হয়।
এর আগে গত এক দশকে এফ-৭ যুদ্ধবিমানের একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। মাইলস্টোনের আজকের দুর্ঘটনায় আবারও আলোচনায় এই বিমানের কার্যক্ষমতা, যান্ত্রিক ত্রুটি ও দুর্ঘটনার বিষয়টি।
চীনের তৈরি এফ-৭ যুদ্ধবিমান এক সময় অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য ছিল তুলনামূলক কম খরচে আকাশ প্রতিরক্ষার একটি সমাধান। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ‘সাশ্রয়ী’ সমাধান আজ পরিণত হয়েছে বিপজ্জনক বোঝায়। পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া, ইরানসহ আরও কয়েকটি দেশে ব্যবহার হওয়া এই বিমানটি এখন প্রায়ই শিরোনামে আসে—বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনার কারণে।
কিউটিভি/আয়শা/২১ জুলাই ২০২৫,/রাত ১০:৫০