স্পোর্টস ডেস্ক : ২০২৩ এর জানুয়ারিতে দলবদলের নতুন ব্রিটিশ রেকর্ড গড়ে ১২১ মিলিয়ন ইউরোর (প্রায় ১৭১৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা) বিনিময়ে এনজো ফার্নান্দেজকে দলে ভেড়ায় চেলসি। সে সময় চেলসি প্রিমিয়ার লিগে বেশ বাজে সময় কাটাচ্ছিল। এমন সময়ে ব্লুজ শিবিরে তার যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল।
প্রিমিয়ার লিগে এসে শুরুতে পারফর্ম করতে ভুগতে হয়েছে এনজোকে। এই লিগের কড়া অনুশীলন ও গতিময় ফুটবলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কষ্ট হচ্ছিল তার। শারীরিক ও মানসিকভাবে নিজের সঙ্গেই লড়াই করতে হচ্ছিল তাকে। যার প্রভাব পড়ে পারফরম্যান্সে। বিশাল পরিমান অর্থ খরচ করার পর তার এমন পারফরম্যান্সের কারণে ফ্লপ সাইনিং হিসেবেই দেখা হচ্ছিল এটিকে।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন এনজো। চলতি মৌসুমে তার নজরকাড়া পারফরম্যান্সে সকল সমালোচনার জবাব দিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন। সদ্য শেষ হওয়া ক্লাব বিশ্বকাপে চেলসির শিরোপা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এই মিডফিল্ডার। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট এসেছে তার পা থেকেই। জায়গা পেয়েছেন বিশ্বকাপের সেরা একাদশেও। বাজে সময় পেছনে ফেলা এনজো এবার চেলসি সমর্থকদের উদ্দেশে এক আবেগমাখা বার্তা পাঠিয়েছেন, যেখানে চেলসিতে তার সেই সংগ্রামমুখর দিনের স্মৃতিচারণা করেছেন এই ২৪ বছর বয়সী তারকা।
এনজো লিখেছেন, ‘যখন আমি এখানে যোগ দিই, তখন জানতাম আমি চেলসির মতো একটি বড় প্রতিষ্ঠানে আসছি, যারা একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু ক্লাবের মালিক আমাকে তার প্রকল্প দেখিয়েছিলেন—ভবিষ্যতের জন্য তার যা কিছু পরিকল্পনা ছিল। আমি মনে করি, আজ আমরা সেই পরিকল্পনার ফল দেখতে পাচ্ছি, এবং আমি খুব খুশি।’
শুরুতে যে চেলসিতে তাকে ভুগতে হয়েছে তা স্বীকার করেছেন এই আর্জেন্টাইন, ‘প্রথম দিকটা আমার জন্য কঠিন ছিল, আমি খুব খারাপ সময় পার করছিলাম। আমি নিজের সঙ্গেই ঠিক ছিলাম না, ম্যাচ চলাকালীন স্বস্তি বোধ করতাম না। আমাকে আরও বেশি ট্রেনিং করতে হতো, সপ্তাহজুড়ে নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হতো, অতিরিক্ত অনুশীলন করতে হতো। সত্যি বলতে, প্রিমিয়ার লিগের গতির সঙ্গে পৃথিবীর অন্য কোনো জায়গার খেলা তুলনীয় নয়। আমি মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। প্রথম বছরে মনে হচ্ছিল, আমি তাল রাখতে পারছি না। নিজের শরীরও ভালো লাগত না, চোটও পেয়েছিলাম। তখন থেকেই পরিশ্রমটা শুরু করলাম।’
কঠিন পরিশ্রমেই খারাপ সময় পেছনে ফেলে সেরা সময়ের দেখা পেয়েছেন এনজো, ‘আমি বিভিন্ন ট্রেইনারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকলাম, যতক্ষণ না ঠিক একজনকে খুঁজে পেলাম। এরপর দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যেই ভালো লাগতে শুরু করল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমি ফলাফল দেখতে পেলাম এবং মাঠেও নিজেকে ভালোভাবে প্রকাশ করতে পারলাম।
এখন আমি মনে করি, এই মৌসুমে ব্যক্তিগতভাবে আমি একটা খুব ভালো কিছু অর্জন করেছি। গোল, অ্যাসিস্ট এবং ক্লাবের হয়ে শিরোপা জয়ে অবদান রাখতে পেরেছি—যেটার জন্য আমি এখানে এসেছিলাম।’চেলসির হয়ে এটাই ছিল এনজোর সেরা মৌসুম। সব মিলিয়ে ৫৩ ম্যাচে ৯ গোল ও ১৭ অ্যাসিস্ট করেছেন এই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। ক্লাব বিশ্বকাপ ছাড়াও জিতেছেন কনফারেন্স লিগের শিরোপাও।
কিউটিভি/আয়শা//১৬ জুলাই ২০২৫,/রাত ৯:১৪