সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আল-আখবারিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোলান মালভূমির কাছে সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আল-রাফিদ শহরে কয়েক ডুনাম (এক ডুনাম=এক হাজার বর্গমিটার) কৃষিজমি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী কর্মীরা সাধারণ সরঞ্জাম দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও তা নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছেন।
শুক্রবার (১১ জুলাই) কুনেত্রার উপ-গভর্নর মুহাম্মাদ আল-সাঈদ জানান, গত ডিসেম্বরে বাশার আল আসাদের সরকারের পতনের পর থেকে ইসরাইল কুনেত্রার উত্তরাঞ্চলে আটটিরও বেশি নতুন সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করেছে। তিনি বলেন, ‘এই ঘাঁটিগুলো ১৯৭৪ সালের চুক্তিতে নির্ধারিত নিরপেক্ষ অঞ্চলের ভেতরেই তৈরি করা হয়েছে, যা সরাসরি চুক্তির লঙ্ঘন।’
মুহাম্মাদ আল-সাঈদ আরও জানান, ইসরাইলি কর্মকাণ্ডের ফলে প্রায় ছয় হাজার হেক্টর (প্রায় ১৫ হাজার একর) জমি সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। এতে গবাদিপশু পালন ও কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল বহু পরিবার তাদের জীবিকা হারিয়েছে। ইসরাইল ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে গোলান মালভূমির অধিকাংশ এলাকা দখল করে নেয়। পরবর্তীতে একতরফাভাবে তারা এই অঞ্চলকে নিজ ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে নেয়, যদিও এই সংযুক্তি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়।
গত বছরের ডিসেম্বরে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শামের নেতৃত্বে সামরিক অভিযানের মুখে সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের পতন হয়। আসাদ রাশিয়ায় পালিয়ে যান। এরপর জানুয়ারিতে অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল শারার নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠিত হয়। এরপর থেকেই ইসরাইল সিরিয়ায় তাদের বোমা হামলা ও সামরিক আগ্রাসন আরও জোরদার করেছে। একাধিক বিমান হামলায় দেশটির সামরিক স্থাপনা, যানবাহন ও অস্ত্রের গুদাম লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।
এসব হামলায় বহু বেসামরিক নাগরিক হতাহত হন। সিরীয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ইসরাইল জাতিসংঘ-নিরীক্ষিত নিরপেক্ষ অঞ্চলে অনুপ্রবেশ বাড়াচ্ছে এবং ১৯৭৪ সালের চুক্তিটি বাতিল বলেও ঘোষণা দিয়েছে।