ডেস্ক নিউজ : নতুন উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবনী প্রকল্পে ঋণ সুবিধা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব অর্থ থেকে ৫০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করেছে। এছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্সগুলো তাদের মুনাফা থেকে এক শতাংশ হারে অর্থ নিয়ে এসব প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করবে। ২০২১ সালের মুনাফার অর্থ থেকে পরবর্তী প্রতিবছর এই তহবিলে এক শতাংশ করে অর্থ স্থানান্তর করে তহবিলের আকার বৃদ্ধি করবে। এই তহবিলের নাম দেওয়া হয়েছে স্টার্টআপ ঋণ তহবিল। এ তহবিল থেকে উদ্যোক্তারা ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন। এ বিষয়ে বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সার্কুলারে বলা হয়, নতুন উদ্যোক্তা, ভিন্নধর্মী প্রকল্প, সম্ভাবনাময় ব্যবসা খাতসহ নানা খাতে নতুন উদ্যেক্তারা ব্যবসা শুরু করতে এই তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবেন। পাশাপাশি যারা এখন ব্যবসা করছেন, তারা নিজেদের ব্যবসা বাড়ানোর জন্য এই তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবেন। এ ধরনের ব্যবসায় আগে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হতো। এখন এই সীমা বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ২ কোটি ও সর্বোচ্চ ৮ কোটি টাকা করা হয়েছে।
এসব উদ্যোক্তাকে ঋণ নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজস্ব অর্থ থেকে ৫০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করেছে। এই তহবিল থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে ৪ শতাংশ সুদে উদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়া হবে। এর বাইরে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোকে ২০২১ সাল থেকে অডিটের মাধ্যমে অর্জিত মুনাফার অর্থ থেকে কমপক্ষে এক শতাংশ অর্থ নিয়ে বিশেষ তহবিল গঠন করতে হবে। প্রতিবছর এক শতাংশ হারে অর্থ মুনাফা থেকে এ তহবিলে স্থানান্তর করতে হবে। এসব তহবিল থেকে উদ্যোক্তাদের কম সুদে ঋণ নিতে হবে। ২১ বছর এবং তার বেশি বয়সি বাংলাদেশি নাগরিকরা এখন স্টার্টআপ ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। একক মালিকানার পাশাপাশি যৌথ উদ্যোগের ব্যবসায় ঋণ দেওয়া হবে।
সার্কুলারে বলা হয়, বাংলাদেশে কার্যরত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বা আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত স্টার্ট-আপ বাছাই প্রোগ্রামের মাধ্যমে মনোনীত বা পুরস্কারপ্রাপ্ত স্টার্টআপ উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা ঋণ প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার প্রাপ্য হবেন। প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনের তারিখ থেকে ২ বছরের কম হলে সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা, ২ থেকে ৬ বছরের মধ্যে নিবন্ধনের বয়স হলে সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা এবং ৬ থেকে ১২ বছরের মধ্যে হলে সর্বোচ্চ ৮ কোটি টাকা ঋণ পাবেন। তবে উদ্যোক্তা প্রাথমিক পর্যায় হলে সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা ঋণ পাবেন।
এতে আরও বলা হয়, এই তহবিলের ধরন হবে পুনঃঅর্থায়ন বা পুনঃবিনিয়োগযোগ্য। ব্যাংকগুলো যে অর্থ গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করবে এর মধ্যে মূল ঋণের অংশ তহবিলে যোগ হবে। সুদ বা মুনাফার অংশ ব্যাংকের আয় খাতে যাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিল থেকে দেওয়া অর্থ আদায় হলে সেগুলো আবার তহবিলে যোগ হবে। এভাবে তহবিলের আকার বাড়বে। সার্কুলারে বলা হয়, গ্রাহকরা ঋণ পরিশোধের জন্য সর্বোচ্চ ৮ বছর সময় পাবেন। এর মধ্যে প্রকল্পভেদে গ্রেস পিরিয়ড হবে ৬ মাস থেকে ২ বছর।
এসব ঋণ ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ৮ বছর পর্যন্ত নবায়ন করা যাবে। তবে ঋণের মেয়াদ ৮ বছরের বেশি হলে সেক্ষেত্রে বাজারভিত্তিক সুদ হার প্রযোজ্য হবে। সব ব্যাংক বা ফাইন্যান্স কোম্পানি এ তহবিলের ঋণ সুবিধায় অংশ নিতে পারবে না। যেসব ব্যাংক বা ফাইন্যান্স কোম্পানির খেলাপি ঋণের হার সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কেবল তারাই এতে অংশ নিতে পারবে। ১০ শতাংশের বেশি খেলাপি ঋণ থাকলে তারা এ তহবিলে অংশ নিতে পারবেন না।
কিউটিভি/আয়শা//১০ জুলাই ২০২৫,/বিকাল ৩:১২